Hydroponic system

ভূমিকাঃ হাইড্রোপনিক (Hydroponic) একটি অত্যাধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি। অতি লাভজনক ফসলের ক্ষেত্রে এই হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে মাটির পরিবর্তে পানিতে গাছের প্রয়োজনীয় খাবার (Nutrient) সরবরাহ করে ফসল উৎপাদন করা হয়।

ঠিকানাঃ এনার্জি ইনস্টিটিউট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ।

যোগাযোগঃ প্রথমত আমাদের সাথে তানভীর হাসান ভাই যোগাযোগ করে এবং ভিজিটের একটা ডেট দেওয়া হয় । ভিজিট করার পরে তার সকল ধরনের চাওয়ার উপর ভিত্তি করে কত টাকা খরচ হবে তার একটা হিসাব দেওয়া হয়।

এরিয়াঃ আমারা যে সেটাপ করি সেটা ২৫ Sqft জায়গা জুড়ে ছিলো।

প্রোজেক্ট বিবরনঃকাজ শুরু করার আগে আমরা ফ্রেম বানিয়ে ফেলি । এখানে আমারা A Shape ফ্রেম ব্যবহার করি এবং ফ্রেমটি ছিল রিমুভাল । ফলে সহজে আমরা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ফ্রেমটি সহজে নিয়ে যেতে পারি। মোট ৮০ টি গাছের জন্য ফ্রেমটি বানানো হয় । ফ্রেমটি বানাতে আমাদের মোট ৫ ফিট সাইজের মোট ১০ টি ৪ ইঞ্চি পাইপ কেটে নেই । কেটে নেওয়া পাইপ গুলো Saw Cutting মেশিন দিয়ে ৩ ইঞ্চি হোল করে নেওয় হয় কারন সেখানে গাছ থাকবে নেট কাপে । এর পর স্কল ধরনের ফিটিং গুলো দিয়ে সেট করে ট্যাঙ্ক এর সাথে যুক্ত করে দেওয়া হয় । সব শেষে পাম্প যুক্ত করে ফাইনাল চেক করা হয় । আমরা কাজটা ১৭/০১/২০২৪ থেকে ১৮/০১/২০২৪ এর মধ্যে শেষ করি ।

কেন হাইড্রোপনিক:

হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত খাদ্য খেতে অপেক্ষাকৃত সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। স্বল্প জায়গায় বেশি ফসল ফলানো যায়। তাছাড়া এ পদ্ধতিতে খরচও কম।

সাধারণতঃ দুই উপায়ে হাইড্রোপনিকস পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন করা যায়। (ক) সঞ্চালন পদ্ধতি (খ) সঞ্চালনবিহীন পদ্ধতি

সঞ্চালন পদ্ধতি: এ পদ্ধতিতে গাছের অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য উপাদানসমূহ যথাযথ মাত্রায় মিশ্রিত করে একটি ট্যাংকিতে নেয়া হয় এবং পাম্পের সাহায্যে পাইপের মাধ্যমে ট্রেতে পুষ্টি দ্রবণ সঞ্চালন করে ফসল উৎপাদন করা হয়। প্রতিদিন অন্ততঃপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা পাম্পের সাহায্যে এই সঞ্চালন প্রক্রিয়া চালু রাখা দরকার। এই পদ্ধতিতে প্রাথমিকভাবে প্রথম বছর ট্রে, পাম্প এবঙ পাইপের আনুসঙ্গিক খরচ একটু বেশি হলেও পরবর্তী বছর থেকে শুধু রাসায়নিক খাদ্য উপাদানের খরচ প্রয়োজন হয়। ফলে দ্বিতীয় বছর থেকে খরচ অনেকাংশে কমে যাবে।

সঞ্চালনবিহীন পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে একটি ট্রেতে গাছের প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদানসমূহ পরিমিত মাত্রায় সরবরাহ করে সরাসরি ফসল উৎপাদন করা হয়। এই পদ্ধতিতে খাদ্য উপাদান সরবরাহের জন্য কোন পাম্প বা পানি সঞ্চালনের প্রয়োজন হয় না। এক্ষেত্রে খাদ্য উপাদান মিশ্রিত দ্রবণ ও উহার উপর স্থাপিত কর্কশীটের মাঝে ৫-৭ সেমি পরিমান জায়গা ফাঁকা রাখতে হবে এবং কর্কশীটের উপরে ৪-৫টি ছোট ছোট ছিদ্র করে দিতে হবে যাতে সহজেউ বাতাস চলাচল করতে পারে এবং গাছ তার প্রয়োজনীয় অক্সিজেন কর্কশীটের ফাঁকা জায়গা থেকে সংগ্রহ করতে পারে। ফসলের প্রকারভেদে সাধারণত ২-৩ বার এই খাদ্য উপাদান ট্রেতে যোগ করতে হয়। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ সহজেই এই পদ্ধতি অনুসরন করে প্লাস্টিক বালতি, পানির বোতল, মাটির পাতিল ইত্যাদি ব্যবহার করেও বাড়ির ছাদ, বারান্দা এবং খোলা জায়গায় সঞ্চালনবিহীন পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদন করতে পারে। এতে খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম হবে।

হাইড্রোপনিক পদ্ধতির লক্ষণীয় বিষয়সমূহ:

  • pH এর মাত্রা ৫.৮-৬.৫ এবং EC এর মাত্রা ১.৫-২.৫ ds/m এর মধ্যে রাখতে হবে।
  • গাছের খাদ্য উপাদানের অভাব জনিত লক্ষণ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকতে হবে।
  • দ্রবণের আদর্শ তাপমাত্রা রক্ষা করতে হবে। সাধারণত দ্রবণের তাপমাত্রা ২৫-৩০৹C এর মধ্যে হওয়া বাঞ্চনীয়।
  • জলীয় খাদ্য দ্রবণে অতিরিক্ত অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • চাষের স্থানে পর্যাপ্ত আলোর সুব্যবস্থা থাকতে হবে এবং রোগমুক্ত চারা ব্যবহার করতে হবে। কোন রোগাক্রান্ত গাছ দেখা গেলে সাথে সাথে তা তুলে ফেলতে হবে।
  • চাষকৃত ফসলে বিভিন্ন পোকা মাকড়ের আক্রমন দেখা দিতে পারে, এদের মধ্যে এফিড, লিফ মাইনার, থ্রিপস এবং মাকড় অন্যতম। প্রতিদিন তদারকির মাধ্যমে এদের দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

উপসংহার

প্রতি বছর বাংলাদেশের জনসংখ্যা, আবাসনের জন্য ঘর-বাড়ি, যোগাযোগের জন্য রাস্তা এবং কল-কারখানা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে আবাদ যোগ্য জমির পরিমাণ। বর্ধিত জনসংখ্যার অব্যাহত খাদ্য চাহিদা পুরণের লক্ষ্যে তাই শুধু আবাদি জমির উপর নির্ভর করা যাবে না। দেশের এমনি অবস্থায় প্রয়োজন অব্যবহৃত খালি জায়গা ও পতিত স্থান শস্য চাষের আওতায় আনা। হাইড্রোপনিক চাষ পদ্ধতি এ ক্ষেত্রে সঠিকভাবে আরোপযোগ্য একটি কৌশল। এ পদ্ধতি বাড়ির ছাদে, আঙ্গিনায়, বারান্দায় কিংবা চাষের অযোগ্য পতিত জমিতে সহজেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

Leave a Comment

Item added to cart.
0 items - ৳ 0.00