বর্তমান সময়ে একটি আলোচিত ফসল হচ্ছে ড্রাগন ফল। এটি দক্ষিন আমেরিকার জঙ্গলে জন্ম নেয়া লতানো এক ধরনের ক্যাকটাস গাছের ফল। বাংলাদেশ এর প্রায় অঞ্চলেই এখন পিলার ও সারিবদ্ধভাবে এই ফল চাষ করা হয়। সারিবদ্ধ ড্রাগন বাগানে আধুনিক সেঁচ এ খরচ খুবই কম। পানি অপচয় রোধ করে এই পদ্ধতিতে খুব সহজেই ইরিগেশন দেয়া যায়।
প্রজেক্টঃ প্রবাসী এগ্রো ফার্মে ড্রিপ ইরিগেশন সিস্টেম সেটাপ।
প্রজেক্ট লোকেশনঃ সোহাতা,নবীনগর, বি-বাড়িয়া।
প্রজেক্ট ডিটেইলসঃ এই ফার্ম এর ৫ বিঘা জমিতে সারিবদ্ধ ভাবে ড্রাগন চারা লাগানো হয়েছে। এই ড্রাগন বাগানের এক একটি সারির দৈর্ঘ ২৬০ ফুট। এবং সারি থেকে সারির দুরুত্ব ১০ ফুট। এই বাগানে গাছে পানি দেয়ার জন্য জমির মধ্য থেকে একটি মেইন লাইন করে, প্রতি দুই সারি পর পর একটি করে পয়েন্ট করে রাখা হয়েছিল। সেই পয়েন্ট থেকে লতা পাইপের সাহায্যে পানি দেয়া হত।
সারি পদ্ধতি ও পিলার পদ্ধতি দুই পদ্ধতিতেই বাংলাদেশে ড্রাগন ফল চাষ করা হয়। তবে ড্রাগন ফল চাষের জন্য ইরিগেশন নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। কারন সেঁচ দেয়ার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে যাতে গাছের গোড়ায় পানি জমে না থাকে। ম্যানুয়াল ভাবে সেঁচ দিতে গিয়ে প্রায়ই এই ভুলটি করে থাকেন কৃষক ভাইরা। ফলে গাছের গোড়া পঁচে যায়। সারি বদ্ধ ড্রাগন বাগানে আধুনিক সেঁচ/ ইন লাইন ড্রিপ ইরিগেশন খুবি কার্যকরী।
পানির উৎসঃ ড্রিপ ইরিগেশন পদ্ধতিতে সেঁচ দেয়ার জন্য পানির উৎস হিসেবে ২০ ফুট উচ্চতায় একটি পানির ট্যাংক বসানো হয়েছে।
কার্জ বিবরনঃ
১. পানিতে থাকা সাধারন ময়লা পরিস্কার করার জন্য প্রথমে আমরা মেইন লাইনে একটি দুই ইঞ্চি স্ক্রিন ফিল্টার ব্যাবহার করি।
২. জমির মধ্যে থাকা মেইন লাইনে ১৬ মিমি ডায়ার ছিদ্র করি। এবং ওয়াসার এর মাধ্যমে বাইপাস কানেক্টর সংযোগ করি।
৩. প্রতিটি সারির জন্য একটি করে ইন-লাইন ড্রিপ টেপ বিছিয়ে দেই।
৪. প্রতিটি সারিই চালু ও বন্ধ করার জন্য সারির শুরুতেই ড্রিপ ভাল্বব সেট করে দেই।
৫. প্রতিটি সারির শেষ অংশ বন্ধ করে দিয়ে। আমরা ইন-লাইন ড্রিপ ইরিগেশন এর কাজ শেষ করি।
কার্যকারিতাঃ
পানি বাচে ৬৫%
পানি সাশ্রয় হয় ৭০%
সময় বাচে ৮০%
গাছ বাচে ১০০%
ফলন বাড়ে ২০%
মন্তব্যঃ পাঁচ বিঘার এই বিশাল জমিতে এরকম ইরিগেশন সাপোর্ট খুবি কার্যকরী। ম্যানুয়াল ভাবে পানি দিতে ৪-৫ জন শ্রমিক সারাদিনেও সেঁচ দেয়া শেষ করতে পারতোনা। এই আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে একজন শ্রমিক বা বাগানের মালিক নিজেই ভাল্বব অন/ অফ করার মাধ্যমেই পুরো বাগানে ইরিগেশন দিতে পারছে। প্রতিটি গাছের গোড়ায় যেহেতু পানি পৌঁছে যাচ্ছে তাই পানি অপচয় হওয়ার কোন সুযোগ থাকছেনা। পানি সাশ্রয় হওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎ, খরচ, ও সময় সব কিছুই সাশ্রয় হচ্ছে এই পদ্ধতির মাধ্যমে। সারিবদ্ধ ড্রাগন বাগানে আধুনিক সেঁচ ব্যাবহার করে অল্প সময়ে পানি দিতে পেরে কৃষক খুবি খুশি হয়েছেন।