বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পাহাড়ি অঞ্চল। কারন পাহাড়ি অঞ্চল যেমন প্রাকৃতিক ভৌগোলিক উপাদান হিসেবে পরিবেশ রক্ষা করছে তেমনি এদেশের সকল মানুষের ফলের চাহিদা পূরণ করতে বিশেষ ভাবে অবদান রাখছে।
পাহাড়ি অঞ্চলে বাগান করা সহজ হলেও গাছ সতেজ ও গাছ থেকে ফলন পেতে প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যা ও পরিমিত পরিমাণে পানি প্রয়োগ। কিন্তু পাহাড়ি অঞ্চলের গাছে সেচ দেয়া এক অন্যতম প্রধান সমস্যা। ক্রমাগতভাবে পাহাড়ি বন উজাড়ের ফলে বৃষ্টি কম হয় ও পাহাড়ের ঝিরি সমূহে পানির সঞ্চয় থাকে না। ফলে ঝিরি বা পাহাড়ের খাদে জমা জলাশয়ের পানি থেকে পাম্প দিয়ে গাছে সেচ দেয়া যায় না। ফলে অতিরিক্ত রোদের তাপের কারনে অনেক মূল্যবাণ গাছ মারা যায়।
তাই গাছ বাঁচাতে আধুনিক ইরিগেশন পদ্ধতি অবলম্বন করা জরুরি। আধুনিক ইরিগেশন পদ্ধতির মধ্যে ড্রিপ ইরিগেশন সিস্টেম অন্যতম। এই পদ্ধতিতে অল্প পানি ব্যবহার করে বিন্দু বিন্দু করে গাছের গোড়ায় পরিমিত পরিমাণে পানি দেয়া সম্ভব।
এই লক্ষ্যে কক্সবাজার,মহেশখালি উপজেলার উত্তর ঝাপুয়া নামক এলাকায় একটি পাহাড়ি বাগানে ২০০ টি ফলের গাছে অনলাইন ড্রিপ ইরিগেশন সিস্টেম ইনস্টল করা হয়েছে।
অনলাইন ড্রিপ ইরিগেশন সেট আপ পদ্ধতিঃ
এই ইরিগেশন সিস্টেমটি সেট আপ করতে এখানে পাহাড়ের উপরে ৫ হাজার লিটার ধারন ক্ষমতার একটি পানির ট্যাঙ্ক স্থাপন করা হয়েছে। পরবর্তীতে পানিতে থাকা ময়লা বা বালুকনা পরিষ্কার করার জন্য মেইন লাইনের সাথে একটি স্কিন ফিল্টার ব্যবহার করা হয়েছে। এবং মেইন লাইনকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করে পাহাড়ের ঢালু বরাবর দেড় ইঞ্চি মেইন লাইন টানা হয়েছে। বিভক্ত করা তিনটি লাইনকে নিদির্ষ্টভাবে কন্টোল করতে লাইনের শুরুতে তিনটি বলবাল্ব ব্যবহার করেছি। এরপরে প্রত্যেকটি সারি বরাবর আমাদের ১৬ মি.লি টিউব বিছিয়ে ভাইপাস কানেক্টর এর মাধ্যমে মেইন লাইনের সাথে এডজাস্ট করে নেয়া হয়েছে। পরিশেষে প্রত্যেকটি গাছের জন্য একটি করে এডজাস্টাবল ড্রিপার ব্যবহার করা হয়েছে। একই ভাবে আমরা বাগানে থাকা দুইশোটি গাছে অনলাইন ড্রিপ ইরিগেশন সিস্টেমটি সেট আপ করেছি।
যার মাধ্যমে পাহাড়ের উপরে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বাল্ব কন্টোল করার মাধ্যমে বাগানে থাকা সকল গাছের গোড়ায় পানি পৌছে যাচ্ছে।
বাগান মালিকের অভিমতঃ
বাগানের মালিক জসিম ভাইয়ের অভিমত, আগে আমার এই বাগানে পানি দিতে প্রায় ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগতো,তাতে আমার যেমন শ্রমিক খরচ বেশি লাগতো তেমনি শ্রমিক ঠিক মত না পেলে পানির অভাবে গাছগুলোর পাতা শুকিয়ে যাওয়া শুরু করতো। তাই আমার গাছ বাঁচাতে এই উদ্যোগ নিয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ এখন আর আমার গাছে পানি দেয়া নিয়ে কোনো টেনশন করতে হয় না। আমার আরোও ড্রাগন,মাল্টা বাগান আছে। পরবর্তিতে আপনাদের কাছ থেকে মালামাল এনে আমার লোক দিয়ে এখন আমি নিজেই সেট আপ করে নিতে পারবো।